Thursday 4 August 2022

CLASS:- 3 পাঠ -১ চলো, বাগানে যাই

             পাঠ -১ চলো, বাগানে যাই

 গত রবিবারে রেণু দিদিমণি ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ের নিকটবর্তী একটি বাগানে নিয়ে গিয়েছিলেন। বাগানে বিভিন্ন গাছপালা ছিলো। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের গাছগুলোর বিষয়ে খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছিলেন।

রেণু দিদিমণি তাদের বলেছিলেন— তোমরা গাছগুলোর দিকে লক্ষ করো। দেখো কিছুসংখ্যক গাছ অনেক উঁচু, কিছু খাটো এবং কিছু গাছ কোমল ও লিকলিকে। এইনানা রকমের গাছই হচ্ছে উদ্ভিদ। প্রণব— দিদিমণি এটা কী গাছ?

রেণু দিদিমণি এটা নিম গাছ। আম, কাঁঠাল, জাম, শাল, অশ্বত্থ এই গাছগুলো নিম গাছের মতোই বড়ো ও উঁচু। এদের কাণ্ড শক্ত, শাখা-প্রশাখা এবং অনেক পাতাযুক্ত হয়।

প্রণব— (কাণ্ডকে স্পর্শ করে) গাছটা বড়ো শক্ত।
রেণু দিদিমণি এই জাতীয় গাছের কাণ্ড মোটা ও শক্ত। এগুলোই হচ্ছে বৃক্ষ। বৃক্ষ থেকে আমরা কাঠ পাই। কাঠ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, ঘরের দরজাজানালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়। অসমের শাল, হোলোং, বনসোম, তিতাচাপা অত্যন্ত মূল্যবান বৃক্ষ। অসম রাজ্যের বৃক্ষের প্রতীক হল হোলোং।

জেনিফার— আমি এই ফুলগাছগুলোকে চিনতে পেরেছি। গোলাপ, গাঁদা, জবা, জুই ফুলের গাছগুলো ফুলে ভরে আছে।

রেণু দিদিমণি এই গাছগুলো বৃক্ষ থেকে খাটো ও ঝোপযুক্ত। এগুলোর কাণ্ড বৃক্ষের মতো শক্ত নয়। তাই এসবকে গুল্ম বলে। ডালিম, লেবু ইত্যাদি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। -

আরতি— এই লতিয়ে ওঠা গাছটির নাম কী?

রেণু দিদিমণি এটা অপরাজিতা ফুলের গাছ এবং তার পাশের গাছকয়টি হল লাউ, ঝিঙে, করলা, কুমড়ো, শশা। অপরাজিতার মতো লাউ, ঝিঙে, করলা, কুমড়ো ইত্যাদি গাছগুলোর জন্য বাঁশের মাচা তৈরি করতে হয়। এদের জন্য বাঁশের মাচার প্রয়োজন কেনো, কখনও ভেবে দেখেছো কি? -

(ছাত্র-ছাত্রীরা চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলো।) প্রণব— দিদিমণি, এই গাছগুলোর কাণ্ড কোমল। বৃক্ষ ও গুল্মের মতো নয় ৷

রেণু দিদিমণি-হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলেছো।

এই গাছগুলোর কাণ্ড কোমল ও লিকলিকে। এরা অন্যের সাহায্যে বেয়ে ওঠে। বেয়ে ওঠার জন্য এদের বাঁশের মাচার প্রয়োজন হয়। পান, গোলমরিচ, ভাদালি পাতা ইত্যাদি গাছগুলো অন্য গাছ বেয়ে বেড়ে ওঠে। অন্যদিকে মিষ্টিকুমড়ো, তরমুজ জাতীয় গাছ মাটিতে লতিয়ে চলে। অন্যের সাহায্যে য়ে ওঠা উদ্ভিদগুলো হচ্ছে লতাজাতীয় উদ্ভিদ।
সাজিদা— দিদিমণি, আমরা যে ঘাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছি, এই ঘাস কোন জাতীয় উদ্ভিদ?
রেণু দিদিমণি— (একটু মিষ্টি হেসে বললেন) এগুলো তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। আমরা সবাই বাড়িতে নানা রকমের শাক-সবজির চাষ করি। যেমন-লাইশাক, পালং শাক, ধনিয়া, পুদিনা ইত্যাদি। এদের কাণ্ড নরম ও ছোটো। দূর্বাঘাস, ঘাস, ধান ইত্যাদি তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। কতগুলো গাছের কাণ্ড ফাঁপা থাকে। যেমন বাঁশ গাছ। বাঁশ গাছের কাণ্ড শক্ত ও উঁচু । তবুও বাঁশ গাছ তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু তৃণজাতীয় উদ্ভিদ হল বাঁশ গাছ। -

উদ্ভিদ আমাদের জন্য বড়ো উপকারী। উদ্ভিদ থেকে আমরা ফুল, ফল-মূল, জ্বালানি কাঠ, ঘর বানানোর সামগ্রী ইত্যাদি পাই। পরিধেয় কাপড়ও গাছ থেকে প্রাপ্ত কার্পাসের আঁশ থেকে প্রস্তুত করা হয়। আমাদের চারপাশে

অনেক ঔষধি গুণযুক্ত গাছ আছে। যেমন-নিম, ঘৃতকুমারী, তুলসী, আদা, কারিপাতা ইত্যাদি। নিম ও ঘৃতকুমারী ত্বকের সমস্যা, তুলসী ও আদার রস সর্দি-কাশি, কারিপাতা পেটের রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

গাছপালা আমাদের প্রয়োজনীয় বায়ু নির্মল করে রাখে। গাছ আমাদের ছায়া দেয়। বেশি পরিমাণে গাছ যে জায়গায় থাকে সেই জায়গা শীতল হয়। গাছপালা খুবই উপকারী তাই তাদের কেটে ফেলা উচিত নয় । বৃক্ষরোপণ করা উচিত। গাছের চারাগুলো গোরু-ছাগল খেতে না পারে সেইজন্য চারদিকে বাঁশের বেড়া দিতে হয়। সময়মত জল দিতে হয় এবং চারাগুলো যাতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে তাই তাদের চারপাশে গজে ওঠা আগাছাগুলো উপড়ে ফেলতে হয়। এসো, আমরা এবারে বাড়ি যাই।

– উপরোক্ত কথা থেকে কি বুঝলে?

    গাছপালা থাকলে মানুষ থাকবে।



আমরা সবাই ফুল ভালোবাসি। আমাদের চারপাশে নানা রঙের, গন্ধযুক্ত ও গন্ধবিহীন ফুল ফোঁটে। গোলাপ, টগর, গাঁদা, জুই ইত্যাদি গন্ধযুক্ত এবং নয়নতারা, জবা, অপরাজিতা ইত্যাদি গন্ধবিহীন ফুল। প্রজাপতি, ভোমরা ও মৌটুসি পাখি ফুলে বসে ও ফুলের রস খায়। মৌমাছি ফুলের রস চুষে মধু তৈরি করে।

উপরের ছবির ফুলগুলো চিনতে পেরেছো কি? তোমাদের বিদ্যালয়ের চত্বরে বা বাড়ির বাগানে কি কি ফুল আছে? সেগুলোর মধ্যে কোনগুলো গন্ধযুক্ত ও কোনগুলো গন্ধবিহীন শিক্ষক বা অভিভাবকের সাহায্যে একটি তালিকা প্রস্তুত করো।

আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় ফুল পদ্ম।

কয়েকটি ঝরা ফুল তুলে আনো এবং ফুলগুলোর নাম লেখো।

(১) উত্তর লেখো

(ক) চার প্রকার বৃক্ষের নাম।
(খ)যেকোনো দুটো লতাজাতীয় উদ্ভিদের নাম।
(গ)অসমে পাওয়া যায় এমন যেকোনো দুটো মূল্যবান কাঠের নাম। 
(ঘ) যেকোনো দুটো গন্ধবিহীন ফুলের নাম।
(ঙ) যেকোনো তিনটে গন্ধযুক্ত ফুলের নাম।
(২) লাউ,ঝিঙে ইত্যাদি গাছের মাচার প্রয়োজন কেনো হয় ?

2.শুদ্ধ উত্তরে ‘✓’চিহ্ন দাও—

(ক) বাঁশ গাছ গুল্ম/বৃক্ষ/তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ।

(খ) গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ বৃক্ষ থেকে ছোটো/বড়ো।

(গ) বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদের কাণ্ড খুব শক্ত/নরম।

—কালে ফোটে।

(ঘ) তাল/আম/নিম গাছের পাতা দিয়ে পাখা তৈরি হয়।

(3) পার্থক্য লেখো—বৃক্ষ ও গুল্ম।

(4) বিন্দুগুলো যুক্ত করো এবং যে ছবি পাবে তাতে রং করো।

No comments:

দ্বিতীয় সাময়িক মূল্যায়ন শ্রেণী:-দ্বিতীয়, বিষয়:- গণিত

CLICK HERE 👉দ্বিতীয় সাময়িক মূল্যায়ন শ্রেণী:-দ্বিতীয়, বিষয়:- গণিত